Skip to content

rajbanshi purana khilari : রাজবংশী পুরাণ খিলাড়ি জীবনী

Rajbanshi purana khilari : রাজবংশী পুরাণ খিলাড়ি জীবনী

জীবনের প্রথমার্ধ:

লাবণ্যদার, স্নেহে মিন্টু নামে পরিচিত, ১৯৯৪ সালের ১৬ মে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার আওতাধীন ডাকুয়া পাড়ার শান্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই ঘনিষ্ঠ সম্প্রদায়ের মধ্যে বেড়ে ওঠা, মিন্টু অল্প বয়সে কমেডির প্রতি তার আবেগ আবিষ্কার করেছিলেন, হাস্যরস ব্যবহার করে অন্যদের সাথে সংযোগ স্থাপনের উপায় হিসেবে।

 
 

 

rajbanshi purana khilari : রাজবংশী পুরাণ খিলাড়ি জীবনী

লাবণ্যদার “মিন্টু” – ডাকুয়া পাড়া গ্রামের কমেডি মায়েস্ট্রো: 

পারিবারিক ইতিহাস:

তার বাবা-মা, ললিত কুমার রায় এবং প্রয়াত বিলাতি রায়, মিন্টুর মধ্যে মূল্যবোধের একটি দৃঢ় অনুভূতি এবং হাসির জন্য গভীর উপলব্ধি তৈরি করেছিলেন। দুঃখজনকভাবে, মিন্টুর মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় বিলাতি রায় মারা যান, যা উদীয়মান কমেডিয়ানের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। এই ক্ষতি সত্ত্বেও, মিন্টু তার সৎ মায়ের উষ্ণ আলিঙ্গনে সান্ত্বনা এবং ভালবাসা পেয়েছিল, যিনি তার সাথে তার নিজের ছেলের মতো আচরণ করেছেন।

 

শিক্ষামূলক যাত্রা:

মিন্টু সালমা নং 3 আর আর প্রাইমারি স্কুলে তার শিক্ষাগত যাত্রা শুরু করেন, যেখানে তিনি তার কৌতুক প্রতিভা প্রদর্শন করতে শুরু করেন। তার ক্যারিশমা এবং হাস্যরস তার সমবয়সীদের মধ্যে সুপরিচিত হয়ে ওঠে। পড়ালেখা অব্যাহত রেখে তিনি সারিয়াম যশোদা উচ্চ বিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেন। পরবর্তীকালে, তিনি দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত জলপাইগুড়ি ভোকেশনাল আইটিআই-তে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ নেন।

 

রাজবংশী পুরাণ খিলাড়ির জন্ম:

ডাকুয়া পাড়ার সীমানা ছাড়িয়ে আনন্দ এবং হাসি ভাগ করে নেওয়ার জন্য, মিন্টু তার ইউটিউব চ্যানেল “রাজবংশী পুরান খিলাড়ি” চালু করেছেন। চ্যানেলটি মিন্টুর অনন্য কৌতুক শৈলীর জন্য দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে, যা সম্পর্কিত উপাখ্যান, তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ এবং স্থানীয় স্বাদের ছোঁয়া মিশ্রিত করে।

 

ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং বিজয়:

মিন্টুর যাত্রা চ্যালেঞ্জ ছাড়া ছিল না, কিন্তু তার স্থিতিস্থাপকতা এবং হাস্যরস তার পথপ্রদর্শক আলো হয়ে ওঠে। জীবনের উত্থান-পতনে কৌতুক খুঁজে পাওয়ার ক্ষমতা দর্শকদের সাথে অনুরণিত হয়েছিল, তাকে একটি উত্সর্গীকৃত ভক্ত বেস অর্জন করেছে। তার মা হারানো এবং তিনি যে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তা সত্ত্বেও, মিন্টুর ইতিবাচক চেতনা এবং হাস্যরসাত্মক দক্ষতা বিরাজ করে।

 

ইউটিউবের বাইরে:

যেমন “রাজবংশী পুরাণ খিলাড়ি” বিকাশ লাভ করেছে, মিন্টু তার দিগন্ত প্রসারিত করেছে। লাইভ পারফরম্যান্স, সহযোগিতা এবং এমনকি অভিনয়ের উদ্যোগও তার সংগ্রহশালার অংশ হয়ে ওঠে। মিন্টুর অনন্য কবজ এবং আপেক্ষিকতা তাকে একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব করে তুলেছে, শুধু ইন্টারনেটেই নয়, যারা তার যাত্রা অনুসরণ করেছিল তাদের হৃদয়েও।

 

উত্তরাধিকার এবং প্রভাব:

ডাকুয়া পাড়ার প্রাণকেন্দ্র থেকে অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে আবির্ভূত হন লাবণ্যদার ‘মিন্টু’। তার গল্প হাসির শক্তি, স্থিতিস্থাপকতা এবং পরিবারের বন্ধনের একটি প্রমাণ। তিনি তার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে এবং তার বাইরেও দর্শকদের হাসাতে চলেছেন, মিন্টু কমেডি জগতে একজন লালিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে রয়ে গেছেন, জলপাইগুড়ি এবং তার বাইরের সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছেন।

 

রাজবংশী ভাষায় কমেডি ভিডিও বানিয়ে উত্তরবঙ্গে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল আগেই। এবারে ইউটিউবের তরফেও সম্মান পেল “রাজবংশী পুরানা খিলাড়ি টিম” (Rajbansi Purana Khiladi Team) । স্বীকৃতি হিসেবে হাতে পেলেন সিলভার প্লে বাটন (Silver play button)। এই প্রথম রাজগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় রাজবংশী ভাষায় কমেডি ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবের স্বীকৃতি পেলেন রাজগঞ্জ (Rajganj) ও বেলাকোবার (Belacoba) ৫ বন্ধু। কৃষক পরিবার থেকে উঠে এলেও অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা এবং লোক হাসানোর ক্ষমতার জোরে উত্তরবঙ্গের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন লাবণ্যদের রাজবংশী পুরানা খিলাড়ি। টিভিতে সিরিয়াল দেখার মতই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তাদের ভিডিও। পরিবারের তরফে শুরুতে সমর্থন না থাকলেও মানুষের ভালোবাসা দেখে পাশে দাঁড়িয়েছেন বাবা-মায়েরাও। ইতিমধ্যেই প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ ভিউ পেয়েছে ইউটিউবে। চ্যানেলে ১ লক্ষ সাব্স‌ক্রাইবার হওয়ায় স্বীকৃতি হিসেবে এবার পেলেন সিলভার প্লে বাটন।

 

শুরুটা দেড় বছর আগে ২০২১-এর মে মাসে। আর পাঁচটা সাধারণ ঘরের মতই কলেজ শেষে ভালো চাকরির খোঁজ করে সবে কাজ শুরু করেছিলেন রাজগঞ্জের কুকুরজান অঞ্চলের ডাঙ্গাপাড়ার লাবণ্য দেব রায় (Lavanya Dev Roy)। তারপরই শুরু হয় করোনার অচলাবস্থা। বাড়িতে বসে কাজ করতে হত। ওই সময় ঘরে থেকে বিনোদনের অভাব সামনে আসে। সেই থেকেই মানুষের মধ্যে বিনোদন পৌঁছে দেওয়ার ভাবনা নিয়ে এগিয়ে আসেন ৫ বন্ধু। রাজবংশী ভাষায় (In Rajbangshi language) গ্রাম বাংলার রোজকার ঘটনা নিয়ে তৈরি কমেডি ভিডিও মন জয় করেছে সকলের। সাড়া পড়েছে উত্তরবঙ্গজুড়ে (across North Bengal) । শুরুর দেড় বছরের মধ্যেই ইউটিউবের তরফে বিরাট সম্মান পেলেন ৫ বন্ধু। এই কাজে এখন আরও দুই মেয়ে সিতা (Sita) এবং অনুশ্রী (Anushri) যোগ দিয়েছেন।

 

তাদের এই লোক হাসানোর উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে, রাজবংশী পুরানা খিলাড়ি (Rajbanshi Purana Khiladi)। শুরু করেছেন ৫ বন্ধু। তাদের নামগুলি হল লাবণ্য (Labanya), সমীর, পিন্টু, জয় এবং বিট্টু। প্রথম দুজন রাজগঞ্জের (Rajganj) কুকুরজান অঞ্চলের বাসিন্দা এবং পরের ৩ জন বেলাকোবা(Belakoba) অঞ্চলের। প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ২৮-এর মধ্যে। লাবন্যই সবার থেকে বড়। তাদের উদ্যোগের নাম রাজবংশি পুরানা খিলাড়ি কেন? প্রশ্ন করতে উত্তর মেলে, এই পুরানা খিলাড়িটা হল লাবণ্য নিজেই। শুরুতে লাবণ্য একাই টিকটক ভিডিও করতেন। সেই ভিডিও ভালোই জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। তবে মাঝে মাধ্যমটি এদেশ থেকে তুলে দেওয়া হয়। তবে ওটুকু সময়ের মধ্যেই যা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, তাতে ইউটিউবে জায়গা করে নিতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। শুরুর প্রায় দেড় বছরের মধ্যে ওই ইউটিউব চ্যানেল ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ সাবসক্রাইব করে ফেলেছেন।

 

করোনার অচলাবস্থায় যখন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন, সেই সময় ঘরে ঘরে বিনোদন যোগান দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন ৫ বন্ধু। রাজগঞ্জ এবং বেলাকোবার (belakoba) কৃষক পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ওই ৫ যুবক তখন ভাবতে পারেননি এত অল্প সময়ের মধ্যে উত্তরবঙ্গের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। রাজবংশী ভাষায় এলাকাভিত্তিক চরিত্র সাজিয়েই দৈনন্দিন জীবনের মজার মজার ঘটনা উপস্থাপন করে চলেছেন তাঁরা। বড় বড় চ্যানেলের ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের মতই জনপ্রিয়তা পেয়েছে তাদের অভিনয়। বর্তমানে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক পান যুবকেরা।

 

শুরুতে কেউ কলেজে পড়ছিলেন না হয় এদিক সেদিক ছোটখাটো কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জীবনের সঠিক দিশা নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। এমন সময় পাঁচ বন্ধু মিলেই এই কাজ শুরু করেন। চাষাভূষা পরিবারের সীমিত আর্থিক অবস্থার মধ্যেই তাদের এই সাহসী উদ্যোগে পাশে ছিলেন পরিবারের লোকেরাও। প্রায় দেড় বছরের টানা প্রচেষ্টার পর মিলল সাফল্য। ইউটিউবে পক্ষ থেকে সম্মান দেওয়া হল ৫ যুবকের এই উদ্যোগকে। শুক্রবার সিলভার প্লে বাটন হাতে পেয়েছেন তাঁরা। এই উদ্যোগের মূল কাণ্ডারি লাবণ্য দেব রায় জানায়, এপর্যন্ত তাদের চ্যানেলে ১ কোটি ৭৩ লক্ষ ৩৮ হাজার ভিউ এসেছে।

 

লাবণ্যরা জানায় তাদের পরিবার মূলত কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। বাড়ি থেকে প্রথমটায় সহযোগিতা না পেলেও ক্রমশ তারাও বুঝতে পারেন তাদের অভিনয় দক্ষতার কথা। লোকমুখে নাম হয় বিস্তর। বাড়ি বয়ে লোক আসতে থাকে ছবি তোলার জন্য। কাজ শুরু করে তারা এতটা জনপ্রিয়তা পাবেন সেটা কখনোই ভাবনা মধ্যেও ছিল না। শুধুমাত্র লোক হাসানোর তাগিদেই এই কাজ শুরু করেছিলেন তারা। ইউটিউবের পক্ষ থেকে সম্ভবত ব্লকের মধ্যে এই ক্ষেত্রে তারাই প্রথম সিলভার প্লে বাটন পেলেন (Silver play button)। যার ফলে তাদের মধ্যে উৎসাহ আরও বেড়ে গিয়েছে। আগামী দিনে অভিনয় জগতে পা রাখতে চান পাঁচ বন্ধু।

 

এই ব্যাপারে লাবণ্যের বাবা ললিত কুমার রায় বলেন, প্রথমটায় একেবারেই সমর্থ‌ন করিনি। বারবার বলেছি, এসব না করে কাজের ব্যাপারে মন দিতে। তবে স্বপ্নেও ভাবিনি, তাদের এই অভিনয় দক্ষতা সকলের নজর কাড়বে। এখন তাদের কাজে পরিবারের তরফে বাধা নেই। সমীর বর্মণের মা কল্পনা বর্মণ বলেন, ছেলে যে এত ভালো অভিনয় জানে তা জেনেই তাঁরা অবাক। তাদের পরিবারের কেউই কোনোদিন অভিনয় করেননি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *